মশিউর রহমান টুটুল, জামালপুর: এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সংকীর্ন সড়ক প্রসস্থ করে নির্মাণ করছেন সাবেক যুগ্ম-সচিব ডাঃ মোতাহার হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার পেঁচারচর গ্রামের বাসিন্দা মরহুম ডাঃ আবেদ আলীর ছেলে জনপ্রসাশন মন্ত্রনালয়ের ওই সচিব উপজেলার চরপুটিমারি ইউনিয়নের একই গ্রামের শামচুল মোল্লার বাড়ি থেকে গোপাল নগরের ছাবেদ আলীর বাড়ি হয়ে নদীর ঘাট পযর্ন্ত তিন কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মানের কাজ শুরু করে এলাকায় এক উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। এর ফলে দূর্ভোগের হাত থেকে বেঁচে যাবেন এ-দূর্গম এলাকার বিভিন্ন গ্রামের স্কুল-কলেজ , মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার শতশত মানুষ। সেই সঙ্গে সুগম হবে তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহনের পথ। চরপুটিমারি ইউনিয়নের চারদিক ঘেরা বিভিন্ন নদ নদী দশআনি ও ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে দীপের মতো বির্স্তীন্ন এলাকা জেগে উঠেছে কয়েক-যুগ ধরে। এখানে বসবাস গড়ে তুলে এ ইউনিয়নেরর পেঁচারচর, কড়ইতলা, বেনুয়ারচর, আইড়মারি, সরদারপাড়া, চিনারচর সহ ১০/১২টি গ্রামের মানুষ। ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি উপজেলা সদর থেকে চরপুটিমারি ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত পাকা সড়ক নির্মাণ করে দিলেও এ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিভিন্ন গ্রামের সড়ক যোগাযোগ এখনো নাজুক রয়েছে। জীবন জীবিকার তাগিদে এখানকার মানুষ প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে লড়াই করে বেঁচে আছেন। দূর্গম এলাকায় বসবাস করলেও এ অঞ্চলের মানুষের জীবিকা কৃষি নির্ভর। উপজেলা সদর থেকে অনেক দুর হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তির অন্ত নেই। রাস্তাঘাট নেই, ভালো হাট-বাজারও নেই, উচ্চ শিক্ষার জন্য নেই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ-দুর্গম এলাকার মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্যে নেই তেমন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ-কারনে উপজেলা, জেলাসহ রাজধানী ঢাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে যাতায়াতে পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। উৎপাদিত কৃষি-পণ্য পরিবহনও দুর্ভোগময়। প্রশ্চাৎপদতায় এখানকার মানুষের জীবন যাত্রার মানে নেমে এসেছে বিপর্যয়। তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহনের একমাত্র অবলম্বন দু’চাকার ঘোড়ারগাড়ি। অনেকের ভাগ্যে আবার তাও জোটেনা। কৃষিপণ্য কাঁধ বা মাথায় বহন করে পার্শ্ববর্র্তী জেলা শেরপুরের শ্রী-বর্দী উপজেলার ঝগড়ারচর বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয়। আবার সেখান থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয় করে ওই একই পন্থায়া বাড়িতে ফিরতে হয়। সড়ক না থাকায় বর্ষা কালে পানি বন্দি হয়ে পড়ে এখানকার মানুষ। এ সময় অনেকের বাড়ি ঘরেই নষ্ট হয় তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য। বেশি বিপাকে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। রাস্তা না থাকায় যানবাহন চলাচল নেই। প্রতিদিন কয়েকশ’ শিক্ষার্থীকে দূর্গম পথ মাড়িয়ে পাঁয়ে হেটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে হয়। এখান থেকে উপজেলা সদরের দুরুত্ব হবে প্রায় ২০ কিলোমিটার। এ কারনে পেঁচারচর গ্রামসহ এর আশ-পাশের কমপক্ষে ১০/১২টি গ্রাম যোগযোগ ধরে এ উপজেলার মূল ভূখন্ড থেকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এই চরপুটিমারি ইউনিয়নের চিনারচরসহ ওই সব গ্রামের কোন সংযোগ সড়ক না থাকায়। এ অঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াতের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ মাটির সড়ক নির্মাণের মহান উদ্যোক্তা সাবেক সচিব ডাঃ মোতাহার বলেন, এখানকার মানুষের ভোগান্তি লাঘবের লক্ষ্যে আমি সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। এলাকাবাসী আমার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তাঁরা সড়ক নির্মানের জন্য স্বতস্ফুর্ত ভাবে জমি প্রদান করেছেন। আমার নিজস্ব অর্থায়নে এ সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। সড়ক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। সে সামর্থ আমার নেই। তবে বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় স্বজন ও এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে এ কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এলাকার স্বার্থে সমাজ হিতৈষী অনেকেই আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন বলে আমার বিশ্বাস। উলেখ্য, এর আগে ডাঃ আবেদ আলীর বাড়ির মসজিদ থেকে মাধব আলীর বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক তিনি নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করেছেন।
